আজ শনিবার, ১৪ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩১শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ গ্রীষ্মকাল, ১৮ই জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

শনিবার, জুন ১৪, ২০২৫
দেশজুড়ে‘ভাইজান’ বাহিনীর গুলিতে আহত ছাত্রদল কর্মীর মৃত্যু

‘ভাইজান’ বাহিনীর গুলিতে আহত ছাত্রদল কর্মীর মৃত্যু

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ভাইজান বাহিনীর ছোড়া গুলিতে আহত ছাত্রদলকর্মী মো. আরিফ মারা গেছেন। বুধবার ভোর পৌনে ৪টার দিকে নগরীর বায়েজিদ থানাধীন বেসরকারি হাসপাতালে দুই দিন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

আরিফ (১৬) চসিক ১নং দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ড ছাত্রদলের একজন কর্মী। ওই ওয়ার্ডের চৌধুরীহাট রেলস্টেশনের পশ্চিমে সন্দ্বীপ কলোনিতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ভুট্টু-সুমন গ্রুপের সঙ্গে সাখাওয়াত গ্রুপের দ্বন্দ্বের জের ধরে পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে দাবি করেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।

এ ঘটনায় নিহতের পিতা বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাটহাজারী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু কাওসার মোহাম্মদ হোসেন।

নিহত আরিফ ওই এলাকার রাজমিস্ত্রি মো. আবুল ফয়েজের পুত্র। তিনি ছয় ভাইবোনদের মধ্যে চতুর্থ এবং ভাইদের মধ্যে বড়। তার পিতা সন্দ্বীপ কলোনিতে দীর্ঘদিন যাবত বসবাস করলেও তার পৈতৃক নিবাস ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাবলা উচ্চ বিদ্যালয়ের পশ্চিম দিঘীরপাড় এলাকায়।

আরিফ চৌধুরীহাটের ফতেয়াবাদ কলেজের পশ্চিমে একটি কারখানায় চাকরি করতেন বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

আরিফের ভাই মো. আলাউদ্দিন এ ঘটনার জন্য স্থানীয় সন্ত্রাসী ভূমিদস্যু ও অস্ত্র ব্যবসায়ী ভুট্টু-সুমন গ্রুপকে দায়ী করে গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, দীর্ঘদিন যাবত এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ভুট্টু-সুমন গ্রুপের সাথে সাখাওয়াত গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ৮ জুন রাতে একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও দুইটি মোটরসাইকেলযোগে অজ্ঞাত ৫-৬ জন  সন্ত্রাসী এসে ভাইজানের লোক পরিচয়ে সাখাওয়াত গ্রুপের প্রধান সাখাওয়াতকে খোঁজ করতে থাকে। এ সময় এলাকার লোকজন সাখাওয়াতকে খোঁজার কারণ জিজ্ঞেস করলে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে স্থানীয় লোকদের বাগবিতণ্ডা হয়।

একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা গাড়িতে থাকা অস্ত্র প্রদর্শন করলে স্থানীয়রা মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে ওই সিএনজিকে ধাওয়া দিলে সন্ত্রাসীরা ৪ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এতে আরিফ গুলিবিদ্ধ হন। তার চিৎকারে স্থানীয়রা এসে সন্ত্রাসীদের ধাওয়া দিলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যাওয়ার সময় আরও এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে এবং ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে সিএনজি অটোরিকশাটি ফেলে রেখে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে এলাকাবাসী আরিফকে মুমূর্ষু অবস্থায় দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ইমারজেন্সিতে ভর্তি করে। তবে চমেক হাসপাতালে আইসিইতে বেড খালি না পাওয়ায় সাজিনাজ হসপিটালে তাকে আইসিউতে ভর্তি করা হয়।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি তকিবুল হাসান চৌধুরী তকী বলেন, নিহত আরিফ চসিক ১নং দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ড ছাত্রদলের একজন নিবেদিত কর্মী। এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগের দোসর ভুট্টু-সুমন গ্রুপের অন্যতম সুমন ও হাটহাজারীর গড়দুয়ারা এলাকার মহিউদ্দিন শিবলু বাচা প্রকাশ ভাইজানের গ্রেফতারের জোর দাবি জানাচ্ছি।

হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মো. তারেক আজিজ জানান, এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত থানায় কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে ঘটনার পর ওই এলাকা থেকে পুলিশ পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা জব্দ করেছে।

আরও পড়ুন
- বিজ্ঞাপন -spot_img

একটি মন্তব্য করতে পারেন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সর্বশেষ

- বিজ্ঞাপন -spot_img