ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ঠা মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৪ঠা রমজান, ১৪৪৬ হিজরি, 

মঙ্গলবার, মার্চ ৪, ২০২৫
খবরতিস্তায় বৈদ্যুতিক শক দিয়ে মাছ শিকার, বিপাকে জেলেরা

তিস্তায় বৈদ্যুতিক শক দিয়ে মাছ শিকার, বিপাকে জেলেরা

ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি: নীলফামারীর ডিমলায় তিস্তা নদীতে ব্যাটারিচালিত মেশিনে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে রাতের আঁধারে মাছ শিকারের অভিযোগ উঠেছে। এতে নদীতে দেশি প্রজাতির মাছের উৎপাদন কমে যাওয়ার পাশাপাশি হুমকির মুখে পড়ছে জীববৈচিত্র্য।
সাধারণ জেলেদের অভিযোগ, এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন দপ্তরে জানানোর পরেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো হুমকি ধামকি শুনতে হয় বলে অভিযোগ তাদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার, কালিগঞ্জ, ঝাড়সিংহেশ্বর , কিসামতের চর, চরখড়িবাড়ি বাইশপুকুর এলাকায় তিস্তা নদীতে রাতের আধারে কিছু অসাধু ব্যক্তি বৈদ্যুতিক শক মেশিন দিয়ে অবাধে মাছ শিকার করা হয়।
জানা গেছে, এ পদ্ধতিতে জেলেরা নৌকায় ইজিবাইকে ব্যবহৃত ব্যাটারি সঙ্গে নেন। সেই ব্যাটারির সঙ্গে একটি ইনভার্টার (ব্যাটারির বৈদ্যুতিক শক্তি কমবেশি করার যন্ত্র) যুক্ত করা হয়। সেই ইনভার্টার থেকে দুটি তার বের করে একটি পানিতে ফেলে দেওয়া হয়। অপর তারটি একটি জালির সঙ্গে যুক্ত থাকে। বিদ্যুতায়িত ওই জালি যখন নদীর পানিতে ফেলা হয় তখন জালির ১০-১৫ ফুট দূরত্বের মধ্যে থাকা মাছগুলো কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ভেসে ওঠে। ভেসে ওঠা মাছগুলো পরে জালি দিয়ে নৌকায় তোলা হয়। এ পদ্ধতিতে মাছ শিকারে অন্যান্য জলজপ্রাণীও মারা পড়ে।
স্থানীয়রা জানান, নিষিদ্ধ চায়না জাল আর রিং জাল ব্যবহারে নদীতে এমনিতেই মাছ পাওয়া যায় না। এই পরিস্থিতিতে বৈদ্যুতিক শক মেশিনে মাছ শিকার করায় মাছের পোনা, ডিমসহ অন্যান্য জলজপ্রাণিও মারা যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে এক সময় মাছের জন্য হাহাকার দেখা দিবে আশঙ্কা তাদের ।
বাইশপুকুর চর এলাকার জেলে বিষ্ণু ও দয়াল বলেন, নদীতে আগের তুলনায় মাছ পাওয়া যায় না। জেলেরা সারা দিন বসে থাকে জাল নিয়ে।মেশিন দিয়ে ছোট বড় মাছগুলো মেরে ফেলা হচ্ছে। যার ফলে মাছের ভয়াবহ সংকট দেখা দিয়েছে। সারা দিনে পাচশত টাকার মাছও পায় না। তারা জানান, সারাদিনে ৩০০ টাকার মাছ পাই নাই। এভাবে চলতে থাকলে পরিবার-পরিজন নিয়ে না খেয়ে দিন কাটাতে হবে।
তিস্তা নদীর প্রবেশ মুখ কালিগঞ্জ এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, সন্ধ্যা হলেই নদীতে ৮-১০ নৌকায় বৈদ্যুতিক শক দিয়ে মাছ নিধন করা হচ্ছে। একটি অসাধু চক্র সহজে বেশি মাছ শিকারের জন্য এই পদ্ধতি ব্যবহার করছে। চক্রের সদস্যরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী। গ্রামবাসী প্রতিবাদ করলে উল্টো হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এমনকি পুলিশি হয়রানিও করা হয়েছে।
এ বিষয়ে  উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শামীমা আকতার বলেন, কিছু অসাধু ব্যাক্তি রাতে নদী-জলাশয়ে নিষিদ্ধ জাল ও বৈদ্যুতিক শক দিয়ে  মাছ শিকার করছে। তাদের চেষ্টা করেও আটক করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে তাদের শনাক্ত করতে তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল মিয়া  বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই। তবে এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

একটি মন্তব্য করতে পারেন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

আরও খবর

- বিজ্ঞাপন -spot_img

সর্বশেষ