রয়টার্স জানিয়েছে, অযাচাইকরণ তালিকায় যুক্ত হওয়ায় পরবর্তী ধাপ হিসেবে এসব কোম্পানির কাছে পণ্য রপ্তানি কমিয়ে বা বন্ধ করে দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন দেশটিতে চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র।
মার্কিন সরকার জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থ রক্ষা করতে এবং সংবেদনশীল প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে নির্দিষ্ট কিছু পণ্য ও প্রযুক্তি রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ করে। এ জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য রপ্তানির সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে, এমন কোম্পানিতে মার্কিন রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তারা পরিদর্শনে যান এবং বিভিন্ন তথ্য যাচাই করেন।
তবে যখন মার্কিন কর্মকর্তারা এ ধরনের পরিদর্শন করতে পারেন না বা পরিদর্শনে বাধা পান, তখন কোম্পানিগুলোকে অযাচাইকরণ তালিকায় রাখা হয়। চীনের ১৩টি কোম্পানির ক্ষেত্রে এমনটিই করা হয়েছে। সাধারণত যেকোনো চীনা কোম্পানিতে মার্কিন কর্মকর্তাদের পরিদর্শনের আগে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন হয়।
অযাচাইকরণ তালিকায় স্থান পাওয়া চীনের কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে পিএনসি সিস্টেম, বেইজিং শেং বো জিয়াটং টেকনোলজি, গুয়াংঝো জিনওয়েই ট্রান্সপোর্টেশন, প্লেক্সাস, বেইজিং জিন শেং বো ইউ টেকনোলজি, ফুলিয়ান প্রিসিশন ইলেকট্রনিকস, গুয়াংঝো জিনিয়ুন ইন্টেলিজেন্ট টেকনোলজি, নানিং ফুলিয়ান ফু গুই প্রিসিশন ইন্ডাস্ট্রিয়াল, নিংবো এমওএফ ট্রেডিং, শেনঝেন বোঝিটংদা টেকনোলজি, শেনজেন জিয়া লি চুয়াং টেক ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড, শেনঝেন জিনগেলাং ও জিআন ইয়েরদা।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, সংবেদনশীল মার্কিন পণ্য ও প্রযুক্তি ‘ভুল হাতে’ পড়া বন্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্র অযাচাইকরণ তালিকা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। দীর্ঘদিন ধরে চীনের সামরিক খাতের আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত হওয়া থেকে মার্কিন প্রযুক্তিকে দূরে রাখতে চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এ জন্য চীনে উন্নত প্রযুক্তির সেমিকন্ডাক্টর ও চিপ তৈরির সরঞ্জাম পাঠানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে দেশটি। প্রযুক্তিযুদ্ধে সর্বশেষ পদক্ষেপ এটি।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, সর্বশেষ অযাচাইকরণ তালিকায় রাখা চীনের কোম্পানিগুলোর প্রকৃতি, তাদের কার্যকলাপ বা তারা যে পণ্য নিয়ে কাজ করে, তার সঙ্গে সম্পর্কিত সম্ভাব্য ঝুঁকি বা অনিশ্চয়তা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নেই মার্কিন কর্মকর্তাদের কাছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান বাইডেন প্রশাসনের নীতি অনুসারে, যদি কোনো বিদেশি সরকার মার্কিন কর্মকর্তাদের অযাচাইকরণ তালিকায় থাকা কোম্পানি পরিদর্শনে বাধা দেয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র ৬০ দিন পর সেসব কোম্পানিকে আরও বেশি বিধিনিষেধের আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু করবে।
তবে যুক্তরাষ্ট্র পরবর্তী সময়ে সফলভাবে এসব কোম্পানি পরিদর্শন করতে পারলে অযাচাইকরণ তালিকা থেকে তাদের নাম সরিয়ে দেয়। গত ১৫ ডিসেম্বর চারটি কোম্পানির নাম এভাবে অযাচাইকরণ তালিকা থেকে সরিয়ে নিয়েছিল দেশটি।
এর আগে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে উক্সি বায়োলজিকস নামের চীনের একটি ওষুধ উপকরণ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের দুটি ইউনিটকে অযাচাইকরণ তালিকায় যুক্ত করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। উক্সি বায়োলজিকস মার্কিন ওষুধ কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকার জন্য কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন বানায়। অযাচাইকরণ তালিকায় যুক্ত হওয়ার পর উক্সি বায়োলজিকস প্রায় ১ হাজার কোটি (১০ বিলিয়ন) ডলার বাজারমূল্য হারায়।
কয়েক মাস পর চীনা কর্তৃপক্ষ উক্সিতে মার্কিন কর্মকর্তাদের পরিদর্শনের অনুমতি দেয়। তখন সেই কোম্পানির শেয়ার ১২ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পায়। গত অক্টোবরে অযাচাইকরণ তালিকা থেকে বেরিয়ে আসে উক্সি বায়োলজিকস।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোস্তাফিজুর রহমান মির্জা। বার্তা সম্পাদক: নাদিম হাসান মির্জা। বিভাগীয় প্রধান (অনলাইন): নূর মিয়া। দৈনিক দিনের কণ্ঠ মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে প্রকাশক কর্তৃক কমর লেন, ফকিরাপুল, ঢাকা-১২২৩ থেকে প্রকাশিত এবং টয়েনবি সার্কুলার রোড, মতিঝিল ঢাকা, এসএসবি প্রিন্টিং প্রেস থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর: ০১৬৪৪৭৯০০৭৯, পিবিএক্স ০৯৬৩৮৮৪৩৪৬২, ই-মেইল: info@dinerkantho.com, news@dinerkantho.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি। | www.dinerkantho.com