আজ সোমবার, ১৬ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২রা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ বর্ষাকাল, ২০শে জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

সোমবার, জুন ১৬, ২০২৫
আন্তর্জাতিক‘ইন্ডিয়া’র চালে সরকার গড়তে নাও পারে বিজেপি!

‘ইন্ডিয়া’র চালে সরকার গড়তে নাও পারে বিজেপি!

ভোট শেষ লোকসভা, হয়ে গেছে ফল প্রকাশও। এখন সরকার গঠনের পালা।

কিন্তু কে গঠন করবে ভারতের সরকার? এনডিএ নাকি ইন্ডিয়া? এই নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।

এমনিতে মমতার দুর্গে এবারও হানা দিতে পারল না ক্ষমতাসীন বিজেপি। বুথফেরত সমীক্ষা ভুল প্রমাণ করে এবারও বাংলায় নিজেদের আধিপত্য ধরে রেখেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সর্বশেষ তথ্যমতে, বাংলার ৪২টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ২৯, বিজেপি ১২, কংগ্রেস এক আসন পেয়েছে। এবারও খাতা খুলতে পারলো না সিপিআইএম। বামেদের শূন্য হাতে ফিরতে হলো। তবে তাদের একটাই ভরসা, ভোট শতাংশের হিসাবে দেড় থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ শতাংশ।

অপরদিকে, ৫৪৩ আসনে বিজেপি এককভাবে পেয়েছে ২৪০ আসন, কংগ্রেস ৯৯ এবং অন্যান্যরা পেয়েছে ২০৪ আসন। সব মিলিয়ে বিজেপি নেতৃত্বাধীন ‘ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স’ (এনডিএ) পেয়েছে ২৯৪ আসন। অন্যদিকে, তাদের প্রতিপক্ষ জাতীয় কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট ‘ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স’ (ইন্ডিয়া) পেয়েছে ২৩২ আসন। অন্যান্যরা পেয়েছে ১৭ আসন।

এই প্রেক্ষাপটে কি বিজেপি সরকার গড়তে পারবে? যদিও ৫৪৩ আসনের মধ্যে সরকার গড়তে প্রয়োজন ২৭২ আসন। খালি চোখে দেখলে মনে হবে এনডিএ তার অনেক বেশি পেয়েছে। ফলে সরকার গড়তে সমস্যা কোথায়? কিন্তু সরকার গড়তে হলে এনডিএ জোট শরিক প্রতিটি রাজনৈতিক দলের প্রায় সমান ভূমিকা থাকতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো রাজনৈতিক দল যদি এনডিএ ছেড়ে বের হয়ে যায় তাহলে বিজেপির ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছতে পারবে না। সেক্ষেত্রে সরকার গড়া কঠিন হয়ে পড়বে। আর এই সন্দেহ তৈরি করেছে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোট।

ইতিমধ্যে জানা যাচ্ছে, এনডিএ জোটের শরিক দুটি দলকে বাগানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছে কংগ্রেস। প্রথমটি বিহারে নীতিশ কুমারের দল – জনতা দল ইউনাইটেড -জেডিইউ, অপরটি অন্ধ্র প্রদেশের চন্দ্রবাবু নাইডুর দল-তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি)। যথাক্রমে এই দুই দল এবারের লোকসভায় আসন পেয়েছে ১২ এবং ১৬ আসন। সে ক্ষেত্রে দুই আসনের যোগফল ২৮টি আসন তারা যদি এনডিএ থেকে বের হয়ে যায়, তাহলে বিজেপি জোট এনডিএর হাতে পড়ে রইবে ২৬৬ আসন। ফলে বিজেপি নেতৃত্বেধীন এনডিএ জোট সরকার গড়তে পারবে না।

এজন্য ইন্ডিয়া আপ্রাণ চেষ্টা করছে সেই কাজ করতে। ইতোমধ্যেই এ কাজের দায়িত্ব পড়েছে তিন দলের নেতার ওপর। কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, মহারাষ্ট্রের এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ার এবং পশ্চিমবঙ্গের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দায়িত্বে সফল হতে নেমে পড়েছেন।

তারা যদি এই কাজে সাফল্য পাযন, তাহলে বিজেপির পক্ষে সরকার গড়া এক প্রকার মুশকিল।

মঙ্গলবার লোকসভার ফল প্রকাশের পরই দিল্লিতে কংগ্রেসের তরফে মল্লিকার্জুন এবং রাহুল গান্ধী জানিয়ে দিয়েছেন, বুধবার (৫ জুন) ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক হবে।  সেখানেই নানান বিষয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ফল প্রকাশের পরেই মমতা বন্দোপাধ্যায় বলে দিয়েছেন, আমরা ভারতের অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে ইন্ডিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আবেদন করছি।

এতে স্পষ্ট, এখন ইন্ডিয়া জোটের মূল লক্ষ্য হল, যে করেই হোক বিজেপির জোট শরিকদের বাগিয়ে নিজেদের দলে নেওয়া। আর এতে যদি তারা সফল হতে পারে, তাহলে বলা যেতেই পারে, জয় পেয়েও বিজেপি সরকার গড়তে পারবে না।

আরও পড়ুন
- বিজ্ঞাপন -spot_img

একটি মন্তব্য করতে পারেন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সর্বশেষ

- বিজ্ঞাপন -spot_img