
আইপিএলে নতুন ইতিহাসের দুয়ারে পাঞ্জাব কিংস। রোববার রাতে বৃষ্টিবিঘ্নিত দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছে গেল দলটি। মুম্বাইয়ের দেওয়া ২০৪ রানের লক্ষ্য ৫ উইকেট হাতে রেখেই তাড়া করে ফেলেছে তারা।
এই ঐতিহাসিক সাফল্যের মূল নায়ক অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার। যিনি গতবার কলকাতা নাইট রাইডার্সকে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন এবং এবার ৪১ বলে ৮৭ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস খেলে পাঞ্জাব কিংসকে নিয়ে গেলেন শিরোপার একদম কাছাকাছি।
কোয়ালিফায়ার-২ হওয়ার কথা ছিল কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে। কিন্তু ভারত-পাকিস্তানের রাজনৈতিক উত্তেজনার জেরে আইপিএল এক সপ্তাহ পিছিয়ে যায়। এরপর সূচি বদলে কোয়ালিফায়ার ও ফাইনালের ভেন্যু সরিয়ে নেওয়া হয় গুজরাটের আহমেদাবাদে। তবে সেখানেও স্বস্তি ছিল না; প্রবল বৃষ্টির কারণে ম্যাচ শুরু হয় নির্ধারিত সময়ের ২ ঘণ্টা ১৫ মিনিট পরে।
আবহাওয়া যদি খেলায় বাধা হয়ে দাঁড়াত, তবে গ্রুপপর্বের অবস্থানের ভিত্তিতে পাঞ্জাবই ফাইনালে উঠে যেত। এ কারণে মুম্বাই দল চাইছিল দ্রুত খেলা শুরু হোক। রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে ম্যাচ শুরু হওয়ার পর মাঠে নেমে তারা লড়াই করলেও শ্রেয়াসদের সামনে শেষ পর্যন্ত টিকতে পারেনি।
মুম্বাইয়ের ইনিংস শুরুটা হয়েছিল আশানুরূপ, কিন্তু অধিনায়ক রোহিত শর্মা আবারও ব্যর্থ। আগের ম্যাচে ৮১ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলা রোহিত রোববার ফিরলেন মাত্র ৮ রান করে। তবে জনি বেয়ারস্টো (৩৮), তিলক ভার্মা (৪৪) এবং সূর্যকুমার যাদব (৪৪)-এর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দল পৌঁছে যায় লড়াই করার মতো স্কোরে। শেষ দিকে নমন ধীরের ১৮ বলে ৩৭ রানের ইনিংস পাঞ্জাবের জন্য লক্ষ্য কঠিন করে তোলে।
তবে বল হাতে সুবিধা করতে পারেনি মুম্বাই। পাঞ্জাব ব্যাটারদের মধ্যে শুরু থেকেই ছিল আত্মবিশ্বাস। শ্রেয়াস আইয়ার নেতৃত্বের ভার কাঁধে নিয়ে সামনে থেকে পথ দেখান। তিনি অপরাজিত ৮৭ রানে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন। এ ছাড়া দলের বাকিরাও দায়িত্বশীল ব্যাটিং করেন, ফলে ২০৪ রানের বিশাল লক্ষ্যও জয় করা সম্ভব হয়।
আইপিএলের ইতিহাসে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে ২০০ রানের বেশি তাড়া করে জয়ের নজির ছিল না কোনো দলের। সেই রেকর্ড এবার ভাঙলেন শ্রেয়াসরা। ম্যাচ শেষে শ্রেয়াস মনে করিয়ে দেন, ‘যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি’—গত ম্যাচে তার এই বক্তব্য যে কেবল কথার কথা ছিল না, সেটাই প্রমাণ করলেন ফাইনালে পৌঁছে।
এখন অপেক্ষা শিরোপার লড়াইয়ের। প্রতিপক্ষ রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। শ্রেয়াস আইয়ার কি পারবেন কলকাতার পর পাঞ্জাবের ভাগ্যও বদলে দিতে? উত্তর মিলবে আইপিএলের ফাইনালে।