
অর্থসংকটে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি অনিশ্চিত তিন শিক্ষার্থীর পাশে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলেন জাবির সামাজিক সংগঠন ইচ্ছা (ICCHA- Inspire Care & Cultivate Human Aid)।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অফিসিয়াল পেইজে এ তথ্য নিশ্চিত করেন ‘ইচ্ছা’।
জানা যায়, অর্থসংকটে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ সেশনে (৫৪ ব্যাচ) চান্সপ্রাপ্ত তিন শিক্ষার্থীর ভর্তিতে অনিশ্চয়তা দেখা গিয়েছে। এই তিন শিক্ষার্থীই যথাক্রমে সমাজবিজ্ঞান ও কলা অনুষদে চান্স পেয়েছেন।
তিন শিক্ষার্থীর বিষয়ে প্রাথমিক তথ্য-
প্রথমজনের বাবা হাওরে বর্গা চাষি। ঋণ করে পড়িয়েছেন ছেলেকে। ছেলের ভর্তির জন্য টাকা সংগ্রহ করতে পারেন নি। শিক্ষার্থীর মা জানান, ১৫ হাজার টাকা ম্যানেজ করার মতো অবস্থা এখন তাদের নেই। তবুও চেষ্টা করে যাচ্ছেন তারা।
দ্বিতীয়জন ঢাকায় থাকেন, পিতা পেশায় রিকশাচালক। পরিবার অর্থসংকটে আছে।পরিবারের ঋণ রয়েছে। নতুন করে ঋণ করা সম্ভব না।
তৃতীয়জনের পিতা সিএনজি ড্রাইভার জেলা শহরে। সন্তানের ভর্তির জন্য কিস্তির লোকের সাথে যোগাযোগ করেছেন।কিন্তু এখনোও কিস্তির লোক নিশ্চিত হয়ে কিছু জানান নাই।
তবে আশার কথা, ইতিমধ্যে এই তিন শিক্ষার্থীর ভর্তির জন্য ফান্ড যোগাড় করতে সক্ষম হয়েছে ইচ্ছা।
এই ব্যাপারে সংগঠনটির শিক্ষাবৃত্তির টিম লিডার কামরুজ্জামান (গণিত বিভাগ, শিক্ষাবর্ষ ২০২০-২০২১) জানান, “ইতিমধ্যে এই তিন শিক্ষার্থীর জন্য আমরা ফান্ড যোগাড় করেছি এবং এই তিন শিক্ষার্থীর ভর্তি নিশ্চিত করেছি।”
এই তিন শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন অনুভূতি ব্যক্ত করে জানান, “ভাইয়া, হঠাৎ করেই আমার আব্বু সুদ করেন আমার পড়াশোনার জন্য। এখন এই অবস্থা হয়েছিলো আমার ভর্তি টা নিয়ে অসুবিধা হচ্ছিল।
হঠাৎ করেই ‘ইচ্ছা’ সংগঠনের পোস্টটা দেখি, কিন্তু প্রথম নক করিনি।
রাতে আব্বু- আম্মু আমার ভর্তি নিয়ে কি করবে কথা বলছিলো।
পরে আমি অনেক দ্বিধা নিয়ে নক করি।
কারণ আমাদের অবস্থা ডাউন হয়ে গেছে ২ বছরের সুদের জন্য। কিন্তু ভাবছিলাম রেসপন্স পাবো না কিন্তু আপনাদের কথা আর সাপোর্ট এর জন্য আমি আবার স্বপ্ন দেখার সুযোগ পেয়েছি।
কৃতজ্ঞ সবার প্রতি।
এই শিক্ষার্থী আরো বলেন, “আমিও একদিন মানুষের পাশে থাকবো ইনশাআল্লাহ।
উল্লেখ্য, রবিবার (২৭ এপ্রিল) আরো দুইজন আর্থিক সংকটের সম্মুখীন শিক্ষার্থীকে ভর্তি করাবে বলে জানান ইচ্ছার টিম।
প্রসঙ্গত, জাবির সামাজিক সংগঠন ইচ্ছা ৫১ ব্যাচ (শিক্ষাবর্ষ ২০২০-২০২১) থেকে এখন পর্যন্ত আর্থিক সংকটে থাকা ১২ জন শিক্ষার্থীর ভর্তির ব্যয় বহন করেছে। ২০১৮ সাল থেকে এই অরাজনৈতিক সংগঠনটি জাবিতে মানবিক সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।