
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে পদ্মা নদী থেকে জিহাদ সরদার (৩০) নামের এক যুবকের মস্তকবিহীন অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরনের পোশাক দেখে লাশের পরিচয় শনাক্ত করেছেন পরিবারের সদস্যরা।
রোববার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার ছোট ভাকলা ইউনিয়নের অন্তার মোড় এলাকার নদী থেকে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে।
জিহাদ সরদার স্থানীয় চরবরাট গ্রামের শহীদ সরদারের ছেলে। তিনি নারায়ণগঞ্জের একটি জাহাজ মেরামত (ডকইয়ার্ডে) কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন।
তার এ নির্মম হত্যাকাণ্ডে পরিবারসহ এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মেঘলা আক্তার (২২) স্বামীর শোকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় লোকজন নদীতে মাথাবিহীন একটি লাশ নদীতে ভাসতে দেখে গোয়ালন্দ ঘাট থানাকে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। এ সময় স্বজনরা তার পরনের পোশাক দেখে লাশের পরিচয় শনাক্ত করেন। দুপুর পর্যন্ত লাশের মাথার সন্ধান পাওয়া যায়নি। তবে পুলিশ ও স্থানীয়রা অনুসন্ধান চালাচ্ছেন।
নিহত জিহাদ ২০১৬ সালে স্থানীয় ডাক্তার মোশারফ হোসেন হত্যা মামলার দুই নাম্বার এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন বলে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে।
জিহাদের ছোট বোন সামান্তা আক্তার বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে তার ভাই জিহাদ নারায়ণগঞ্জ হতে বাড়ি আসেন। বিকালে বাড়ি হতে বের হয়ে অনেক রাত হয়ে গেলেও বাড়ি না আসায় আমি তাকে কয়েকবার ফোন করি। সর্বশেষ রাত ১২টার দিকেও তিনি আমাকে জানান কিছুক্ষণ পরই বাড়ি ফিরছেন। এরপর আমরা তার ফোনটি বন্ধ পাই। পরদিন শুক্রবার দুপুরে পরিবারের পক্ষ হতে আমরা গোয়ালন্দ ঘাট থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করি এবং সম্ভাব্য সব জায়গায় তার খোঁজ করতে থাকি। রোববার সকালে অন্তার মোড় এলাকার পানিতে মাথাবিহীন একটি লাশ ভেসে থাকার খবর পেয়ে আমরা ছুটে যাই। সেখানে আমার ভাইয়ের পরনের প্যান্ট দেখে অর্ধগলিত অবস্থায়ও আমার মা তাকে শনাক্ত করেন।
তিনি আরও বলেন, আমার ভাইয়ের তো কোনো শত্রু ছিল না। কারা আমার ভাইকে এভাবে মারল জানি না। আমরা হত্যাকারীদের দ্রুত চিহ্নিত করে গ্রেফতার ও ফাঁসি চাই।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। এরপর সুরতহাল তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
এছাড়া স্বজনরা লাশটি জিহাদের বলে শনাক্ত করলেও তারা শতভাগ নিশ্চিত হওয়ার জন্য পিবিআইয়ের সহায়তায় কাজ করছেন। সেইসঙ্গে এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে। নিহত জিহাদ ডাক্তার মোশারফ হত্যা মামলার দুই নাম্বার এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন বলে তিনি নিশ্চিত করেন।