
বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা রোববার জানিয়েছেন, সিরিয়ায় একজন স্ক্র্যাপ ডিলার একটি পুরাতন বোমা ব্যবহার করে প্রচণ্ড বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে কমপক্ষে ১৬ জন নিহত ও ১৮ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে ।
দামেস্ক থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
শনিবার ভূমধ্যসাগরীয় শহর লাতাকিয়ায় বিস্ফোরণে একটি চার তলা ভবন ধসে পড়ে। কংক্রিটের স্ল্যাব ভেঙে পড়ে। এতে বাসিন্দারা তাদের বাড়ির নিচে চাপা পড়ে যায়।
উদ্ধারকারী দল রাতভর লাশগুলো উদ্ধার করেন। এদের মধ্যে পাঁচ শিশু রয়েছে। জীবিতদের সন্ধানে তল্লাশী অভিযান চলছে।
সিরিয়ার বেসামরিক প্রতিরক্ষা দল জানিয়েছে, অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকের একটি হার্ডওয়্যার দোকানে এ বিস্ফোরণে ১৬ জন নিহত হয়েছে।
সিরিয়ার সানা সংবাদ সংস্থার ছবিতে দেখা যায়, লাতাকিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দক্ষিণাঞ্চলীয় আল-রিমাল এলাকা থেকে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠছে। ভবনটি যেখানে এক সময় দাঁড়িয়ে ছিল সেখানে ধ্বংসস্তূপের স্তূপ দেখা গেছে ছবিতে।
ব্রিটেন-ভিত্তিক যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসও বিস্ফোরণটিকে ’দুর্ঘটনা’ বলে অভিহিত করেছে।
লাতাকিয়ার ৩২ বছর বয়সী বাসিন্দা ওয়ার্দ জামমৌল সংবাদ সংস্থা এএফপিকে জানান, তিনি এক প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান। বিস্ফোরণের পর তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন যে, একটি ভবন সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। চারদিকে ধোঁয়া ও ধ্বংসস্তূপ ছড়িয়ে পড়েছে। এ সময় আহতদের চিৎকারে পরিবেশ আতঙ্কিত হয়ে ওঠে।
গত মাসে বেসরকারি সংস্থা হিউম্যানিটি অ্যান্ড ইনক্লুশনের এক প্রতিবেদনে ২০১১ সালে শুরু হওয়া সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ থেকে অবশিষ্ট অবিস্ফোরিত অস্ত্রের বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছিল।
সিরিয়ার জনগণ প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর প্রথমবারের মতো তাদের বিদ্রোহের ১৪তম বার্ষিকী উদযাপনের জন্য যখন জমায়েত হয়েছিল, ঠিক সময়েই শনিবারের বিস্ফোরণটি ।
২০১১ সালের ১৫ মার্চ আসাদের সরকারের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের মাধ্যমে সিরিয়ার বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল। হাজার হাজার মানুষ অংশ নিয়েছিল ওই বিক্ষোভে ।
তিনি বিক্ষোভ দমন করার পর এটি পরবর্তীতে গৃহযুদ্ধে রূপ নেয়।
গত ৮ ডিসেম্বর ইসলামপন্থী বিদ্রোহীদের হাতে আসাদের পতনের পর এ বছর স্মরণসভা পালিত হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা অনুমান করেছেন যে, যুদ্ধের সময় ব্যবহৃত প্রায় দশ লাখ বিস্ফোরকের মধ্যে ১ লাখ থেকে ৩ লাখ কখনও বিস্ফোরক এখনো বিস্ফোরিত হয়নি।