
দেশে গত কয়েক দশকের ইতিহাসে সবচেয়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবার অর্থাৎ আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটি বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি আরও বলেন, এ বছর ডিসেম্বর থেকে আগামী বছর মার্চের মধ্যে যেকোনো সময় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
তবে দ্য গার্ডিয়ানকে নবগঠিত দল জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব নয়।
গণমাধ্যমটি বলছে, ইতিমধ্যে ক্ষমতায় ফিরতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। ইউনূসের বৈধতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তার ওপর ক্রমবর্ধমান চাপ প্রয়োগ করছে দলটি।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী গার্ডিয়ানকে বলেছেন, এই সরকার সহসাই নির্বাচন দিতে চাচ্ছে না। সংস্কারের জন্য এদের কোনো ম্যান্ডেট নেই। এটি কেবলই অন্তর্বর্তীকালীন একটি সরকার।
ব্রিটিশ এই গণমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত আগস্টে মুহাম্মদ ইউনূস যখন দেশে ফিরলেন তখনও বাংলাদেশের রাস্তাগুলো ছিল রক্তে ভেজা। পুলিশের ছোড়া বুলেটে নিহত এক হাজারেরও বেশি বিক্ষোভকারী ও শিশুর লাশ মর্গে স্তূপ করে রাখা ছিল তখনও।
ক্যালেন্ডারের পাতায় তখন ৫ আগস্ট ২০২৪। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে সেদিন পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। এরপর দেশ ছেড়ে হেলিকপ্টারে চড়ে ভারতে পালান ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনার শাসনামল নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, হাসিনার শাসনামলে কোনো সরকার ছিল না, ছিল একটি দস্যু পরিবারের শাসন। সরকারপ্রধানের যেকোনো আদেশই তখন পালিত হতো। কেউ সমস্যা তৈরি করছে? আমরা তাদের উধাও করে দেব। নির্বাচন করতে চান? আমরা নিশ্চিত করব যে আপনি যেন সব আসনে জয়ী হন। আপনি টাকা চান? এই যে ব্যাংক থেকে এক মিলিয়ন ডলার ঋণ, যা আপনাকে কখনোই ফেরত দিতে হবে না।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস দ্য গার্ডিয়ানকে বলেছেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অপূরণীয় ক্ষতি করেছেন। এটি ছিল সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত একটি দেশ। আরেকটি গাজার মতো, তবে এতে কোনও ভবন ধ্বংস হয়নি, ধ্বংস হয়েছে প্রতিষ্ঠান, নীতি-নৈতিকতা, মানুষ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক।
সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা জানান, শিক্ষার্থীদের অনুরোধেই তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব দিতে রাজি হয়েছেন।