শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি: গাজীপুরের শ্রীপুরে কৃষিজমি, খাসজমি, নদীর পাড়সহ সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মাটি কেটে অবাধে বিক্রি করছে একটি চক্র। স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় এসব চলছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তাঁরা বলছেন, ট্রাকের মাধ্যমে রাতে এই মাটি পাচার করা হচ্ছে আশপাশের ইটভাটা ও নির্মাণকাজে ব্যবহারের জন্য। এতে একদিকে যেমন কৃষিজমির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হচ্ছে, তেমনি পরিবেশগত বিপর্যয়ের ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। প্রশাসনের উদাসীনতার কারণে এই চক্রের তৎপরতা দিন দিন বাড়ছে বলে দাবি তাঁদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিবছরের মতো এবারও শীত মৌসুমে মাটি ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে; বিশেষ করে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ভিন্ন প্রেক্ষাপটে মাটির ব্যবসা চলছে। কোনো ধরনের আইনের তোয়াক্কা না করে অবাধে বিক্রি হচ্ছে মাটি; বিশেষ করে বনাঞ্চলসংলগ্ন এলাকায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, শ্রীপুরের ভেরামতলী এলাকায় সংরক্ষিত বনের পাশে অবাধে মাটি কাটা হচ্ছে কয়েক দিন ধরে। মাটির গাড়ির চাপে নুহাশপল্লী ও বারতোপা সড়কের একটি কালভার্টও ভেঙে গেছে। গাজীপুর সাফারি পার্ক সীমানাপ্রাচীর ঘেঁষে দেদার মাটি বিক্রি করছে তরুবিথী পিকনিক স্পট নামের একটি প্রতিষ্ঠান। চালা জমি থেকে ৩০-৪০ ফুট গভীর করে মাটি কেটে অবাধে বিক্রি করছে তারা। এ ছাড়া শ্রীপুরের বদনীভাঙ্গা, গাজীপুর, নিজ মাওনা, আক্তাপাড়া, তেলিহাটির তালতলী, উত্তরপেলাইদ, কাওরাইদ, বরমী ও গোসিঙ্গা এলাকায় দৌরাত্ম্য চলছে মাটি ব্যবসায়ীদের। মাটি পরিবহনের ডাম্প ট্রাকের অতিরিক্ত ওজনে আঞ্চলিক সড়কগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
ভেরামতলী এলাকার বাসিন্দা নাজিম উদ্দীন বলেন, ‘আমাদের এলাকায় বনের
এরপর পৃষ্ঠা ৭ কলাম ৪
পাশ থেকে কোথাও বনের ভেতর থেকে রাতে মাটি কাটা হচ্ছে। প্রতিবাদ করলেই হুমকি দেয়।’ বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন গাজীপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হাসান ইউসুফ খান বলেন, ‘এভাবে অবৈধভাবে মাটি কাটায় মাটির উপরিভাগে থাকা পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। ফলে ভবিষ্যতে ওই জমিতে চাষবাস কঠিন হয়ে পড়ে। এর সঙ্গে সঙ্গে জমির মাটি কেটে নেওয়ার ফলে পানি ধারণক্ষমতা কমছে, যা ভবিষ্যতে পানি সংকটের কারণ হতে পারে। এ ছাড়া বিভিন্ন কীটপতঙ্গ ও মাইক্রো অর্গানিজমের আবাসস্থল নষ্ট হয়ে মাটির প্রাকৃতিক গুণ নষ্ট হচ্ছে। আইনে আছে, নিজের জমি থেকেও মাটি কেটে বিক্রি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।’
শ্রীপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অবৈধভাবে মাটি কাটার বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছি। ভেরামতলী এলাকায় মাটির গাড়ি প্রবেশের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।’ খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজিব আহমেদ।