যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে সামরিক হেলিকপ্টারের সঙ্গে আমেরিকান এয়ারলাইন্সের একটি প্লেনের সংঘর্ষের ঘটনায় আরোহীদের কেউ বেঁচে নেই বলে নিশ্চিত করেছে ন্যাশনাল ট্রান্সপোরটেশন সেফটি বোর্ড (এনটিএসবি)। এ ঘটনায় শোক জানিয়ে, জো বাইডেন প্রশাসনের ব্যর্থতার কথা তুলে ধরেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘আমি নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিই, কিন্তু ওবামা, বাইডেন এবং ডেমোক্র্যাটরা নীতিকে অগ্রাধিকার দিয়েছে।’
এদিকে দুর্ঘটনাস্থল থেকে ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার করেছে তদন্তকারীরা। এতে মূলত ফ্লাইটের তথ্য রেকর্ড থাকে। এনটিএসবি বলছে, দুর্ঘটনা নিয়ে তথ্য থাকলেও, তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশে ৩০ দিন সময় প্রয়োজন। আবহাওয়া পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ায় উদ্ধার অভিযান স্থগিত রয়েছে। পরিস্থিতি অনুকূলে এলে লাশ ও ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারে অভিযান শুরু হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) রাতে রোনাল্ড রিগ্যান ওয়াশিংটন ন্যাশনাল এয়ারপোর্টের কাছে মাঝ আকাশে আমেরিকান এয়ারলাইনসের একটি অভ্যন্তরীণ যাত্রীবাহী প্লেনের সঙ্গে মার্কিন সেনাবাহিনীর একটি ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টারের সংঘর্ষ হয়। পরে উড়োজাহাজ ও হেলিকপ্টারটি হিমশীতল পটোম্যাক নদীতে বিধ্বস্ত হয়। যুক্তরাষ্ট্রে ১৫ বছর পর কোনো যাত্রীবাহী বিমান দুর্ঘটনার শিকার হলো।
আমেরিকান এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, উড়োজাহাজটিতে ৬৪ জন আরোহী ছিলেন। এর মধ্যে ৬০ জন যাত্রী ও চারজন ক্রু। আর এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, হেলিকপ্টারটিতে তিন সেনা ছিলেন। সামরিক হেলিকপ্টারটি প্রশিক্ষণ ফ্লাইট ছিল। সংঘর্ষ হওয়ার আগে হেলিকপ্টারটিকে সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছিল বলে জানা গেছে। এয়ার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণকক্ষের কর্মকর্তারা হেলিকপ্টারের পাইলটের কাছে জানতে চেয়েছিলেন যে আমেরিকান এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজটিকে দেখা যাচ্ছে কি না। নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে হেলিকপ্টারের পাইলটের উদ্দেশে বলা হয়, পিএটি টু-ফাইভ, আপনি কি সিআরজে প্লেনটিকে দেখতে পাচ্ছেন?’ এরপর নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে আবারও বলা হয়, ‘পিএটি টু-ফাইভ, সিআরজে উড়োজাহাজের পেছন দিক দিয়ে পার হোন।
সংঘর্ষের আগ মুহূর্তে নিয়ন্ত্রণকক্ষের আরেকটি অডিওতে হেলিকপ্টারের পাইলটকে বলতে শোনা যায়, উড়োজাহাজটিকে দেখতে পেয়েছি পিএটি টু-ফাইভ, ভিজ্যুয়াল সেপারেশনের অনুরোধ জানাচ্ছি। এরপর ১৩ সেকেন্ডেরও কম সময়ের মধ্যে অডিওতে হাঁপানোর মতো কিছু শব্দ শোনা যায়। জোরে ‘ওহ’ বলে একটি শব্দও শোনা গেছে। বিধ্বস্ত হওয়ার সময় ওই শব্দগুলো ধারণ হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অডিওটিতে অন্য একটি উড়োজাহাজের পাইলটের কথাও শোনা গেছে, যিনি ওই সংঘর্ষ ও বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনাটি দেখেছেন এবং নিয়ন্ত্রণকক্ষকে নিশ্চিত করেছেন। আরেক পাইলটকে বলতে শোনা গেছে, হ্যাঁ, আমরা রানওয়ের কাছে ছিলাম ও পটোম্যাক নদীর অপর পাশে আগুনের শিখা দেখেছি।
২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারির পর যুক্তরাষ্ট্রে যাত্রীবাহী উড়োজাহাজে কোনো প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটেনি। এর আগে ১৯৮২ সালে পটোম্যাক নদীর ওপর ফোরটিনথ স্ট্রিট ব্রিজে এয়ার ফ্লোরিডা ফ্লাইট ৯০ বিধ্বস্ত হয়েছিল। এই ঘটনায় ৭০ জন যাত্রী ও চারজন ক্রু নিহত হন। শুধু চার যাত্রী এবং একজন ক্রু বেঁচে গিয়েছিলেন। সূত্র : রয়টার্স।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোস্তাফিজুর রহমান মির্জা। বার্তা সম্পাদক: নাদিম হাসান মির্জা। বিভাগীয় প্রধান (অনলাইন): নূর মিয়া। দৈনিক দিনের কণ্ঠ মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে প্রকাশক কর্তৃক কমর লেন, ফকিরাপুল, ঢাকা-১২২৩ থেকে প্রকাশিত এবং টয়েনবি সার্কুলার রোড, মতিঝিল ঢাকা, এসএসবি প্রিন্টিং প্রেস থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর: ০১৬৪৪৭৯০০৭৯, পিবিএক্স ০৯৬৩৮৮৪৩৪৬২, ই-মেইল: info@dinerkantho.com, news@dinerkantho.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি। | www.dinerkantho.com