যুক্তরাষ্ট্র যদি কিয়েভকে অর্থ ও অস্ত্র সহায়তা বন্ধ করে, তাহলে দুই মাসের মধ্যেই ইউক্রেন যুদ্ধ থামতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর সামারায় গত মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন তিনি।
রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘পশ্চিমা পৃষ্ঠপোষকেরা হাত গুটিয়ে নিলে তাদের (ইউক্রেন) অস্তিত্ব থাকবে না। পশ্চিমাদের সরবরাহ করা অর্থ ও গোলাবারুদ ফুরিয়ে গেলে তারা এক মাসও টিকে থাকতে পারবে না। আমি মনে করি, আগামী দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যেই তাদের পশ্চিমা রসদ শেষ হয়ে যেতে পারে। এদিক থেকে বিবেচনা করলে সত্যিকার অর্থে এ মুহূর্তে ইউক্রেনের কোনো সার্বভৌমত্ব নেই।’
ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ইউক্রেনের পশ্চিমা পৃষ্ঠপোষকেরা শান্তি চাইলে এখনই তার আদর্শ সময়। রাশিয়া ইতিমধ্যেই এ ইস্যুতে তার অবস্থান স্পষ্ট করেছে। তিনি বলেন, যুদ্ধ বন্ধে ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনার জন্য তিনি প্রস্তুত রয়েছেন, তবে দেশটির ‘অবৈধ প্রেসিডেন্ট’ ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে কোনো আলোচনা হতে পারে না। কেননা কিয়েভকে প্রতিনিধিত্ব করার কোনো বৈধ কর্তৃত্ব তাঁর নেই। সামরিক আইন চলাকালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে জেলেনস্কির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় তিনি আর ইউক্রেনের বৈধ নেতা নন।
এমন সময়ে এই মন্তব্য করলেন পুতিন, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধের অবসান ঘটানোর চেষ্টা করছেন। ট্রাম্প গত সপ্তাহে বলেছিলেন, জেলেনস্কি ‘সমঝোতা’ চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধের ইতি টানতে আগ্রহী।
নির্বাচনী প্রচারে ক্ষমতায় এলে অবিলম্বে ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর অঙ্গীকার করলেও এখনো এই সংঘাত অবসানের কোনো ইঙ্গিত মিলছে না। গত সোমবার রুশ কর্মকর্তারা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এখনো ট্রাম্প ও পুতিনের সম্ভাব্য বৈঠক নিয়ে তাঁদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। তবে উভয় পক্ষই সংলাপের সম্ভাবনার বিষয়ে ইতিবাচক।
কিয়েভের অভিযোগ, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে তাদের বাদ দিয়েই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চায় রাশিয়া। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এ ব্যাপারে নতুন মার্কিন প্রশাসনকে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে ইউক্রেনকে উপেক্ষা করে কোনো শান্তি আলোচনা হলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।
এর আগে গত শুক্রবার পুতিন পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান, যাতে তারা ইউক্রেনকে মস্কোর সঙ্গে শান্তি আলোচনায় বসতে চাপ দেয়। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের সঙ্গে আলাপকালে পুতিন বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে যেকোনো আলোচনাই অবৈধ; কারণ, ২০২২ সালে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি রাশিয়ার সঙ্গে সংলাপ নিষিদ্ধ করেছিলেন।
রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, কিয়েভ তাদের পৃষ্ঠপোষকদের নির্দেশ মানতে কোনো তাড়া দেখাচ্ছে না, এমনকি রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রেও নয়। তবে পুতিন স্বীকার করেন, পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনকে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বোঝানোর চেষ্টা করছে। তাঁর ভাষায়, কিয়েভ এখনকার পরিস্থিতিতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে। কারণ, তাদের পৃষ্ঠপোষকদের কাছ থেকে তারা শত শত বিলিয়ন ডলার পাচ্ছে এবং তা ভোগ করছে। যারা (পশ্চিমারা) এই তহবিলের জোগান দিচ্ছে, তাদেরই শেষ পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বাধ্য করা উচিত। ইউক্রেনকে শেষ পর্যন্ত এটাই করতে হবে; কারণ, এর কোনো বিকল্প থাকবে না।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোস্তাফিজুর রহমান মির্জা। বার্তা সম্পাদক: নাদিম হাসান মির্জা। বিভাগীয় প্রধান (অনলাইন): নূর মিয়া। দৈনিক দিনের কণ্ঠ মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে প্রকাশক কর্তৃক কমর লেন, ফকিরাপুল, ঢাকা-১২২৩ থেকে প্রকাশিত এবং টয়েনবি সার্কুলার রোড, মতিঝিল ঢাকা, এসএসবি প্রিন্টিং প্রেস থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর: ০১৬৪৪৭৯০০৭৯, পিবিএক্স ০৯৬৩৮৮৪৩৪৬২, ই-মেইল: info@dinerkantho.com, news@dinerkantho.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি। | www.dinerkantho.com