শেখ হাসিনা সরকার ও সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ নিয়ে ২০২১ সালে ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্য আল জাজিরা।
আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রাপ্ত সেই প্রতিবেদনে, সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ, তার পরিবার ও অন্যদের প্রসঙ্গ উঠে আসে।
কীভাবে রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করে প্রতিদ্বন্দ্বীকে অপহরণ এবং অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন তারা তাও তুলে ধরা হয়েছিল। শেখ হাসিনার আশকারায় কীভাবে দুর্নীতি হয় প্রতিবেদনে তার বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হয়।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য সানডে টাইমস আজ (১৯ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে তথ্যচিত্রটি প্রচারের পর এর সঙ্গে যুক্ত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে একজন ব্রিটিশ আইনজীবীর পরামর্শ চেয়েছিল শেখ হাসিনা সরকার।
প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়ার পর জেনারেল আজিজ এবং তার ভাইদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। ওই সময় বাংলাদেশ সরকার প্রতিবেদনটিকে ‘মিথ্যা, মানহানিকর এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তার প্রতিবাদ করেছিল।
দ্য সানডে টাইমস জানিয়েছে, স্যার এলটন জন ও ভিক্টোরিয়া ব্যাকহামের জন্য কাজ করা ব্রিটিশ আইনজীবী ডেসমন্ড ব্রাউনি কেসির পরামর্শ চেয়েছিল শেখ হাসিনা সরকার। এছাড়া তথ্য ফাঁস করা হুইসেল ব্লোয়ার জুলকারনাইন সায়ের খানের ভাইকে লোহার রড দিয়ে পেটানো হয়। যারা প্রতিবেদনে সহায়তা করেছিলেন তাদের অনেকে ভয়ে দেশ ছাড়তেও বাধ্য হন।
গত ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার গণঅভ্যুথানের পর ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাঙচুর করা শোবার ঘরে টুকরো টুকরো করা নথি খুঁজে পায় সানডে টাইমস। এতে উল্লেখ আছে, ব্যারিস্টার ব্রাউনি এ ব্যাপারে সহায়তা করতে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করতে সম্মতি জানিয়েছেন। পরবর্তীতে ক্লার্ক উইলিয়ামস নামের এক আইনজীবীর সঙ্গে হাসিনার প্রতিনিধিদের যোগাযোগ করিয়ে দেন ব্রাউনি। যিনি যুক্তরাজ্যে ওই প্রতিবেদনের সঙ্গে যুক্তদের বিরুদ্ধে মামলায় সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন। পাশাপাশি ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল, তকে বাংলাদেশে গ্রেপ্তারের পরিকল্পনাও ছিল বলে সেইসব নথি থেকে জানা যায়।
বার্গম্যান প্রতিবেদনটি তৈরিতে সহায়তা করেছিলেন। যুক্তরাজ্যে মানহানির মামলা দায়ের, এমনকি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আলাদা মামলা করার বিষয়েও পরামর্শ চেয়েছিলেন।
ডেসমন্ড ব্রাউন শেখ হাসিনা সরকারকে প্রাথমিক পরামর্শ দেওয়ার কথা সানডে টাইমসকে নিশ্চিত করেছেন। তবে পরে এ ব্যাপারে আর কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে জানান তিনি। তবে আইনজীবী ক্লার্ক উইলিয়ামস এ বিষয়ে সানডে টাইমসকে কোনো মন্তব্য করেননি।
শেষ পর্যন্ত হাসিনা সরকার যুক্তরাজ্যে মামলা করার পরিকল্পনা থেকে সরে এসে ইউটিউব ও ফেসবুককে প্রামাণ্যচিত্রটি সরিয়ে নিতে চাপ দেওয়ার চেষ্টা করে। বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধ প্ল্যাটফর্ম দুটি প্রত্যাখ্যান করে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোস্তাফিজুর রহমান মির্জা। বার্তা সম্পাদক: নাদিম হাসান মির্জা। বিভাগীয় প্রধান (অনলাইন): নূর মিয়া। দৈনিক দিনের কণ্ঠ মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে প্রকাশক কর্তৃক কমর লেন, ফকিরাপুল, ঢাকা-১২২৩ থেকে প্রকাশিত এবং টয়েনবি সার্কুলার রোড, মতিঝিল ঢাকা, এসএসবি প্রিন্টিং প্রেস থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর: ০১৬৪৪৭৯০০৭৯, পিবিএক্স ০৯৬৩৮৮৪৩৪৬২, ই-মেইল: info@dinerkantho.com, news@dinerkantho.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি। | www.dinerkantho.com